মো: জিহাদ হোসেন
উপজেলা প্রতিনিধি মতলব উত্তর চাঁদপুর।
মতলব উত্তর উপজেলায় মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের চলতি বোর মৌসুমে ধানক্ষেতে সেচ দিতে পারছেন না কৃষকরা। শেষ মুহূর্তে সেচের পানির অভাবে বোরো ধান নষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় রয়েছেন । ধান ঘরে তুলতে না পারলে জমি প্রস্তুত ও ধান লাগানো বাবদ বড় অঙ্কের লোকসান গুনতে হবে কৃষকদের। এতে তাঁরা হতাশ। তাঁদের অভিযোগ, পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কর্তৃপক্ষ পর্যাপ্ত সেচের ব্যবস্থা না করায় এ সমস্যা হয়েছে।
এদিকে চলতি বোর মৌসুমে পানির অভাবে জমি ফেটে চৌচির হয়ে যাওয়ায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় স্হানীয় কৃষকরা অভিযোগ করেন পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বিরুদ্ধে। তারই প্রেক্ষিতে ইউএনও মাহমুদা কুলসুম মনি কৃষি কর্মকর্তাকে নিয়ে সরজমিন পরিদর্শন করে সততা পায়।
১৫ এপ্রিল দুপুরে সরজমিনে দেখা যায়,ওই সেচ প্রকল্পের ফতেপুর পূর্ব ও পশ্চিম, গজরা, মোহনপুর, জহিরাবাদ, ফরাজি কান্দির প্রায় ৫০০ হেক্টর বোরো ধান আবাদ জমিগুলো সেচের অভাবে ফেটে চৌচির হয়ে আছে। অনেকটা বিরানভূমি বা খিলখেতের মতো পড়ে আছে যেসব জমি। সেচের অভাবে ধানগাছও মরে যাচ্ছে।
মোহনপুর এলাকার কৃষক মনির হোসেন বলেন, সেচের অভাবে তাঁর প্রায় ৯০ শতাংশ জমি ফেটে চৌচির হয়ে আছে। বোরো ধান গাছ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তাঁর এলাকার আরও অনেক কৃষকের জমির একই অবস্হা। পাউবো কর্তৃপক্ষ সেচের ব্যবস্থা না করায় এ সমস্যা হয়েছে।
কৃষক আমান উল্লা,রহিম, জব্বার জানান, শেষ মুহূর্তে জমিতে পানি দিতে না পারলে ধান চিটা হয়ে ক্ষতির মুখে পড়ার আশঙ্কায় করছে। আমরা সুদে টাকা নিয়ে বোরো আবাদ করেছি। ফলন ভালো আশা করেছিলাম। শীষ থেকে ক্ষেতের বেশিরভাগ ধান বের হয়ে গেছে। আগামী ২০-২৫ দিনের মধ্যে পাক ধরে আসতো এবং কেটে ঘরে তুলতে পারতাম। কিন্তু গত ২০ দিন ধরে জমিতে পানি দিতে পারছি না। এই মুহূর্তে পানি দিতে না পারলে ধানের ফলন ভালো হবে না। আর ধান ঘরে তুলতে না পারলে সুদে নেওয়া ঋণ পরিশোধ কীভাবে করবো, আর পরিাবরের সদস্যদের নিয়ে কীভাবে খাবার জোগাবো; এই দুশ্চিন্তায় রাতে ঘুম আসে না।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফয়সাল মোহামদ আলী জানান, শেষ মুহূর্তে সেচের পানির অভাবে বোরো ধান নষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় রয়েছেন। সেচের সমস্যা নিয়ে প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকা থেকে কৃষকরা আমাদের কাছে আসছে। পানির সমস্যার সমাধানে জন্য মেঘনা ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে কোন সুরাহা হচ্ছেনা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদা কুলসুম মনি জানান , কৃষকদের অভিযোগ ভিত্তিতে সরজমিনে পরিদর্শন করি। সেচের অভাবে জমি ফেটে চৌচির হয়ে আছে। দ্রুত পানি সরবরাহের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কর্তৃপক্ষের সাথে কয়েক দফা কথা হয়েছে।
মেঘনা ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের পওর বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ সেলিম শাহেদ এর মোবাইলে ফোন করা হলেও রিসিব না করায় তার কোন নেওয়া বক্তব্য সম্ভব হয়নি।