আসগর সালেহী, ব্যুরোচীফ চট্টগ্রাম।
চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে ২০১৩ সালে ঘটে যাওয়া ঐতিহাসিক ভূজপুর ট্রাজেডির মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে ৩০ দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছেন ভূজপুর মজলুম ঐক্য পরিষদের নেতৃবৃন্দ। ১১ এপ্রিল ঘটনার একযুগ পূর্তিকে কেন্দ্র করে আয়োজিত মানববন্ধনে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।
ভূজপুর মজলুম ঐক্য পরিষদের উদ্যোগে আয়োজিত এই মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন পরিষদের সভাপতি মোহাম্মদ দিদারুল আলম এবং সঞ্চালনায় ছিলেন সাধারণ সম্পাদক ও হেফাজত নেতা মাওলানা আসগর সালেহী।
সমাবেশে বক্তারা দাবি করেন, ২০১৩ সালের ঘটনায় আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলায় মসজিদ-মাদরাসা ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং স্থানীয় মাদরাসার মুহতামিমকে তুলে নেওয়া হয়। সেই ঘটনার পর ৫টি মামলা দায়ের করা হয়, যা পরবর্তীতে একটি মামলা ডিভাইড করে ৭টিতে উন্নীত করা হয়। এই মামলাগুলোর কারণে ভূজপুরের হাজার হাজার মানুষ ২০১৩ সাল থেকে এখন পর্যন্ত সপ্তাহে অন্তত চারদিন করে আদালতে হাজিরা দিতে বাধ্য হচ্ছেন।
জ
বক্তারা অভিযোগ করেন, বিগত আওয়ামী লীগের আমলে স্থানীয় সংসদ সদস্য নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী, আওয়ামী লীগ নেতা এটিএম পেয়ারুল ইসলাম এবং আলোচিত সন্ত্রাসী আবু তৈয়ব ভূজপুর ট্রাজেডির মামলা ইস্যু বানিয়ে সাধারণ মানুষকে মামলা থেকে বাদ দেওয়ার ভয় দেখিয়ে কোটি কোটি টাকার বাণিজ্য করেছে। অনেক নিরীহ লোক বারো বছর ধরে জেল-জুলুম, পালিয়ে থাকা, আর্থিক ও সামাজিকভাবে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে। ব্যবসা-বাণিজ্য, বাড়িঘর হারিয়ে আজ তারা দিশেহারা।
সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন ভূজপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মাওলানা শফিউল আলম নূরী, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সাহিত্য সম্পাদক ও জামিয়া ইসলামিয়া ভূজপুরের মহাপরিচালক আল্লামা জুনাইদ বিন জালাল, ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি নুরুল ইসলাম তালুকদার, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের উত্তর জেলা সেক্রেটারি মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন, অবসরপ্রাপ্ত হেডমাস্টার হাফিজুর রহমান, জামায়াত নেতা জিয়াউর রহমান, বিএনপি নেতা নাজিম উদ্দীন বাচ্চু, নেজামে ইসলাম পার্টির মাওলানা এরশাদ বিন জালাল, মাওলানা এম. নিজাম উদ্দীন, হিন্দু সমাজের রনজিত কুমার পাল, বৌদ্ধ প্রতিনিধি বিজন বড়ুয়া, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জাফর, খেলাফত মজলিসের মাওলানা নাঈমুদ্দিন, যুবদলের সৈয়দ মোহাম্মদ মিজবাহ, জামায়াতে ইসলামীর আব্দুস সালাম, মজলুম পরিষদের মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, মোহাম্মদ ইলিয়াস রাজু, মাওলানা বখতিয়ার তালুকদার, হাফেজ শহিদুল্লাহ এবং ইসলামী ছাত্র সমাজ উত্তর জেলার সভাপতি মাওলানা তারেকুল ইসলাম।
নেতৃবৃন্দ বলেন, মামলাগুলো সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এসব মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহার করে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। তা না হলে আগামী ১৫ মে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন অথবা সংবাদ সম্মেলন করে ফটিকছড়িতে হরতাল, অবরোধ ও অবস্থান কর্মসূচী ঘোষণা করা হবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তারা।
এক মাসের কর্মসূচির অংশ হিসেবে ১২ ও ১৩ এপ্রিল মামলার বিপক্ষে জনমত গঠনের লক্ষ্যে গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করা হবে। ১৫ এপ্রিল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করা হবে।
আন্দোলনকারীরা বলেন, দাবি বাস্তবায়ন না হলে বৃহত্তর ঐক্যের ভিত্তিতে আগামী দিনে আরো কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।