আসগর সালেহী, ব্যুরোচীফ চট্টগ্রাম।
ঈদকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রামের শহর ও গ্রামে জমে উঠেছে কেনাকাটা। শহরের নামীদামী শপিংমলগুলোর সঙ্গে তাল মিলিয়ে গ্রামীণ বাজারগুলোতেও বেচাকেনার ধুম পড়েছে। ঈদের কেনাকাটায় সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ অন্য যে কোনো সময়ের তুলনায় বেশি দেখা যাচ্ছে।
চট্টগ্রামের অক্সিজেন, ফতেয়াবাদ, হাটহাজারী বাজার, নাজিরহাট বাজার, ফটিকছড়ি বিবিরহাট বাজার, কাজিরহাট বাজারসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, ইফতারের পর থেকেই নারী-পুরুষের উপচে পড়া ভিড়। বিক্রেতারা বলছেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ক্রেতাদের উৎসাহ অনেক বেশি, কেনাকাটাতেও তারা বেশ স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন।
এবারের ঈদ বাজারে বেশিরভাগ পণ্যের দাম সহনীয় পর্যায়ে থাকায় ক্রেতারা সহজেই তাদের পছন্দের কেনাকাটা করতে পারছেন। বাজার মনিটরিং ও সঠিক সরবরাহ নিশ্চিত করায় ব্যবসায়ীরাও স্বাভাবিক দামে পণ্য বিক্রি করতে পারছেন, যা ঈদ উৎসবকে আরও আনন্দময় করে তুলছে।
ঈদ বাজারকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন মার্কেটে ব্যবসায়ী সমিতির উদ্যোগে গিফট কুপন ও র্যাফল ড্র-এর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে রঙিন ফেস্টুন, ব্যানার ও মাইকিং করা হচ্ছে।
শুধু গ্রামীণ বাজার নয়, চট্টগ্রাম শহরের অভিজাত শপিংমলগুলোতেও কেনাকাটার জোয়ার লেগেছে। সবচেয়ে বেশি ভিড় দেখা যাচ্ছে রিয়াজউদ্দিন বাজার, সানমার ওশান সিটি, আলমাস শপিং কমপ্লেক্স, আগ্রাবাদ শেখ মুজিব রোডের শপিংমল ও চট্টগ্রাম শপিং কমপ্লেক্সসহ নগরীর বড় বড় মার্কেটগুলোতে।
নির্বিঘ্ন ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ঈদের কেনাকাটা নিশ্চিত করতে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) ও নগর পুলিশ যৌথভাবে নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। সিসিটিভি ক্যামেরা, অতিরিক্ত নিরাপত্তা কর্মী এবং ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে, যাতে ক্রেতা-বিক্রেতারা স্বাচ্ছন্দ্যে ঈদের কেনাকাটা সম্পন্ন করতে পারেন।
ঈদ বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম স্থিতিশীল রাখা ও ভোক্তাদের অধিকার সুরক্ষিত করতে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। অতিরিক্ত মূল্য আদায়, ভেজাল পণ্য বিক্রি, ওজনে কারচুপি ও অনিয়ম প্রতিরোধে এসব অভিযানে বিভিন্ন বাজার ও শপিং মলে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। ইতোমধ্যে বেশ কিছু ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হয়েছে এবং ভোক্তাদের স্বার্থ রক্ষায় জেলা প্রশাসন নিয়মিত অভিযান চালিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছে।
কাজিরহাট বাজার বণিক কল্যাণ সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেন, “আমাদের বাজারে এখনো পর্যন্ত কোনো ধরনের সমস্যা হয়নি। ক্রেতারা নির্ভয়ে শপিং করছেন। অতীতে রাজনৈতিক চাঁদাবাজি ও দখলবাজির কারণে ব্যবসায়ীরা আতঙ্কে থাকলেও এবার সে ভয় নেই।”
ঈদ বাজারের এই প্রাণচাঞ্চল্য চলবে চাঁদ রাত পর্যন্ত। ক্রেতাদের আগ্রহ ও বিপণিবিতানের জমজমাট অবস্থা দেখে ব্যবসায়ীরা বেশ আশাবাদী যে, এবারের ঈদ বাজার হবে অত্যন্ত লাভজনক।