মোঃ শামসুজ্জামান রিয়াদ বদরগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধি রংপুর
রংপুরের তারাগঞ্জে আন্তঃজেলা ফুটবল টুর্নামেন্টে জয়পুরহাট নারী ফুটবল দলের সঙ্গে রাজশাহী নারী ফুটবল দলের খেলা বিকেল ৩টায় অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। মাঠ প্রস্তুত। খেলোয়ারেরাও চলে এসেছে। কিন্তু নারী দলের খেলা বন্ধের ডাক দেয় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের তারাগঞ্জ উপজেলা সভাপতি আশরাফ আলী। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয় । এক পর্যায়ে খেলা বন্ধ করে ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন।
জানা গেছে, আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে ৩টায় উপজেলার সয়ার ইউনিয়নের বুড়িরহাট উচ্চবিদ্যালয় মাঠে আন্তঃজেলা ফুটবল টুর্নামেন্টের জয়পুরহাট নারী দল ও রাজশাহী নারী দলের খেলা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। কিন্তু এ খেলা বন্ধের ঘোষণা দিয়ে মাইকিং করেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের তারাগঞ্জ উপজেলা সভাপতি আশরাফ আলী। খেলা বন্ধে বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দেন তিনি। এ নিয়ে খেলার আয়োজক ও ইসলামী আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। পরে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিসহ দুই পক্ষকে নিয়ে আলোচনায় বসেন ইউএনও রুবেল রানা। কিন্তু কেউ কাউকে ছাড় না দেওয়ায় অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে খেলা বন্ধ করে মাঠে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়।
খেলার আয়োজকেরা জানান, প্রতিবছর বুড়িরহাট উচ্চবিদ্যালয় মাঠে আন্তঃজেলা ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হয়। এ বছরও খেলার আয়োজন করা হয়েছে। এ খেলায় কারও কোনো আপত্তি নেই। খেলার আয়োজনের সমস্ত প্রস্তুতি শেষ। আজ বিকেল ৩টায় জয়পুরহাট নারী ফুটবল দল ও রাজশাহী নারী ফুটবল দলের খেলা ছিল। খেলোয়ারেরা চলে এসেছে। হঠাৎ ইসলামী আন্দোলনের নেতা আশরাফ আলী খেলা বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়ে মাইকিং করেন। এরপর বিকেলে আলোচনায় বসলে তিনি বিক্ষোভের হুমকি দেন। এতে করে প্রশাসন খেলা বন্ধ করে ১৪৪ ধারা জারি করে।
ইউএনও রুবেল রানা বলেন, খেলার আয়োজক ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের তারাগঞ্জের নেতা এবং ইত্তেহাদুল উলামা সংগঠনের নেতাদের নিয়ে বসা হয়েছিল। সেখানে জামায়াতি ইসলাম, বিএনপি নেতা, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরাও ছিলেন। কিন্তু কেউ কাউকে ছাড় দিতে রাজি নন। তাই এলাকায় আইনশৃঙ্খলা অবনতি ঘটতে পারে। বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসক স্যারের সঙ্গে কথা বলেছি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সেখানে বিকেল সাড়ের ৩টার দিকে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।
বিকেল সাড়ে ৫টায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,
বুড়িরহাট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ দেখা যায়, সাজানো গোছানো মাঠে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘিরে রেখেছে। নারী খেলোয়ারেরা খেলতে না পারা চলে গেছে।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের তারাগঞ্জ উপজেলা সভাপতি মাওলানা আশরাফ আলী বলেন, আমাদের দাবি ছিল খেলা বন্ধ করা। খেলা বন্ধ করেছে প্রশাসন। আমরা আমাদের সকল কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছি।
খেলার আয়োজকদের একজন নয়ন মিয়া বলেন, এলাকার ফুটবল প্রেমীদের আনন্দ দিতে এ খেলার আয়োজন করা হয়েছে। কিন্তু ইসলামী আন্দোলনের নেতা আশরাফ আলী না বুঝে খেলা বন্ধ করে দিল। খেলোয়ারেরা ফিরে গিয়েছে।