মো: আলমগীর হোসেন, উপজেলা প্রতিনিধি
টেকনাফ উপজেলার সচেতন নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে
টেকনাফের অপহরণ ইস্যু নিয়ে কক্সবাজারে আগত গৃহায়ণ ও গণপূর্ত উপদেষ্টার মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান।
আমরা টেকনাফ অঞ্চলের স্থানীয় বাসিন্দা, শিক্ষার্থী, ও সচেতন নাগরিক সমাজ বর্তমানে চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে দিনাতিপাত করছি। সাম্প্রতিক সময়ে সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর দৌরাত্ম্য এবং রোহিঙ্গাদের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে টেকনাফ ও উখিয়ার জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এর ফলে এই অঞ্চলে বসবাসরত সাধারণ মানুষ মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
বর্তমানে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর একটি অংশ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়েছে। পাশাপাশি, স্থানীয় পাহাড়ি এলাকায় গড়ে ওঠা সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর অপহরণ বাণিজ্য এবং চাঁদাবাজির কারণে টেকনাফের মানুষ ভয় এবং অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে।
প্রতিদিন অপহরণ করে স্থানীয়দের পাহাড়ে নিয়ে মোটা অঙ্কের মুক্তিপণ দাবি করা হচ্ছে।
অপহরণের ভয়ে বর্তমানে কেউ সন্ধার পর কিংবা নির্জন সময়ে বের হতে পারছে না।
গত ১ বছরে ২৮৭ জন অপহরণ করা হয়েছে এবং ৩৪ জনকে মেরে ফেলা হয়েছে। টেকনাফে অপহরণ বিষয়ে টেকনাফের গোয়েন্দা সংস্থার কাছ থেকে আরও লোমহর্ষক তথ্য চাইলে নিতে পারেন।
এছাড়াও, এসব সন্ত্রাসী গোষ্ঠী স্থানীয় পাহাড়ি জমি দখল, রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে মাদক পাচার, এবং পর্যটকদের ওপর হামলার মতো গুরুতর অপরাধে জড়িত। প্রশাসনের মাঝে মাঝে পরিচালিত অভিযানের পরও অপরাধীরা আইনের আওতার বাইরে থেকে যাচ্ছে, যা স্থানীয় জনগণের জীবনে আরও সংকট সৃষ্টি করছে।
আমাদের দাবিসমূহ:
১। টেকনাফের পাহাড়ি এলাকায় সশস্ত্র সন্ত্রাসী ও অপহরণকারীদের রোধে অস্থায়ী ঘাঁটি ও নিয়মিত যৌথ অভিযান পরিচালনা।
২। অপহরণ চক্রের সাথে জড়িত অপরাধীদের দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা।
৩। রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সীমানায় কঠোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করে রোহিঙ্গাদের স্থানীয় জনপদে অবাধ বিচরণ বন্ধ করা।
৪। স্থানীয় এলাকায় পুলিশের টহল জোরদার এবং পাহাড়ি এলাকায় ড্রোনসহ নজরদারি ব্যবস্থা চালু করা।
৫। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর পুনর্বাসন এবং ক্ষতিপূরণ প্রদানের ব্যবস্থা।
৬। রোহিঙ্গাদের অবৈধভাবে জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি এবং ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তি বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ।
আমরা বিশ্বাস করি, আপনার দূরদর্শী নেতৃত্বে এবং কার্যকর নির্দেশনার মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান সম্ভব। দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলে টেকনাফের সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা নিরাপদ ও স্বাভাবিক হয়ে উঠবে।
অতএব, আমরা আপনার নিকট বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি, আমাদের দাবিগুলো গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।